Tag: গল্প

  • কিছু সম্পর্কে দূরত্ব কখনো ঘুচে না

    কিছু সম্পর্কে দূরত্ব কখনো ঘুচে না

    যে বালিকাটি আমাকে ভালোবাসতে চায় তার মাঝে আমার মাঝে সীমাবদ্ধতার দূরত্ব রয়েছে। যে দূরত্ব ভেঙে কাছে আসতে আমাদের মাঝে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের দেয়াল তৈরি হবে। আমাদের অনেক কথা জমা হয়ে আছে, ছোট টুকটুকে কিউট একটা মেয়ে ইশফা। কতবার চেয়েছি, যাই ওর সাথে বসে গল্প করি। তা আর হয় না। ওর মা নানা নানী কি মনে করবে ভেবে আর আগানো হয় না। আমারো ওকে নিজের ছোট ভাই-বোনের মতো ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। কি হত, হয়ত আমার একজন বোনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত! কিন্তু তা আর হয় না। মানুষ তখন প্রবাদ কপচাবে, মা’র চেয়ে মাসির দরদ বেশি! এই এক সমস্যা আমাদের সমাজে।

    সময়ে সময়ে ওর সাথে কিছু স্মৃতি তৈরি হয়েছে। যেগুলো আমাকে ওকে মনে রাখতে সহায়তা করে। এসব স্মৃতির পরিমান যে খুব দীর্ঘ তাও না। তাছাড়া ওর সাথে বেশি দেখা সাক্ষাৎও হয় না। আমার খালাবাড়ির পাশেই ওর নানাবাড়ি। বেড়াতে গেলে তখন দেখতে পাই। আমি আসছি এটা জানা মাত্রই দৌড়ে ছুটে চলে আসে, কেবল দেখার জন্য, ওর ইচ্ছে হয়, ভাইয়া বলে গলা জড়িয়ে ধরতে, পারে না, আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি। ওর চোখে তখন নানান কথার পসরা সাজানো। মনে হয়, আমাকে না দেখার দিনগুলোতে সবকিছু ভেবে ভেবে রেখে দিয়েছে, দেখা হলে এটা বলবে, ওটা বলবে, হাসবে, কাঁদবে, অভিমান করবে। আমিও ওর হাসির সাথে হাসাবো। কাঁদলে বুকে জড়িয়ে ধরবো, সান্ত্বনা দিব, অভিমান করলে, তা ভেঙে দিবো, আরো বেশি করে ভালোবাসবো।

    এমন অনেক ভাবনার ভেতর দিয়ে আমাদের সময় কেটে যায়। দূরত্ব তবু ঘুচে না। মায়া বাড়ে, ভালোবাসা বাড়ে। কখনো বাড়িতে থাকতে মনে হয়, যাই কোন এক অজুহাতে খালাবাড়ি বেড়িয়ে এসে ওকে দেখা আসি। কখনো যাওয়াও হয়। কিন্তু সেই একই দূরত্ব, একই চোখের ভাষা দৃশ্যমান হয়, কখনো নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি, আমার চোখে কোন ভিজে উঠেছে, এখুনি বর্ষা নামবে খুব করে। আমি তখন আড়াল হই। চোখ মুছি। স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করি। ব্যস্ততায় লিপ্ত হই। ইশফা তখন সেই বাড়ির আশেপাশে ঘুরতে থাকে। ওর খেলার সাথীদেরকে নিয়ে আসে খেলার জন্য। এ কেবল অজুহাত মাত্র। বাচ্চা মেয়েটাও অজুহাত বুঝে!

    কিছু ভালোবাসারা বোধহয় এমনি। দূরত্ব ঘুচায় না তাদের সম্পর্কের মধ্যে কখনো!