শিরোনাম দেখে অবাক হবার কিছু নাই। হ্যাঁ, এটা পুরুষরাও হতে পারে। পুরাতন ঐতিহাসিক বইগুলোতে এর কিছু খন্ডচিত্রও রয়েছে। এটা নতুন কিছু না৷ সচেতনতার জন্যই বিষয়টা সামনে আনা। অধুনা পশ্চিমা বিশ্বে এটা এখন নারীদের মতোই সাধারণ বিষয়। তবে এশিয়ায় এর প্রচলন নেই। তবে পশ্চাত্যের থেকে অন্য সবকিছু আমদানি হলেও এটা হবার নয় কেন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে নারীদের কাছে। এমনকি ঢাকার শহরেও এর পূর্ণ আভাস পাওয়া যাচ্ছে এখন।
কয়েকশো মেইল এস্কর্ট গ্রুপ রয়েছে এই ঢাকার শহরে। হ্যা, এই শহরের নারীদের এখন পুরুষ ভাড়া করার প্রয়োজন হয়। কারণ তারা এখন স্বাবলম্বী হচ্ছে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে তারা প্রতিনিয়ত পরিশ্রম করে চলছে। তাদের চাহিদা যোগাতেই এখন পুরুষ পতিতার প্রয়োজন হয়৷ পতিতা শব্দটা নিয়ে বাংলাদেশের এককালের জনসমালোচিত লেখিকা খুব বিরোধীতা করেন। যেহেতু বাংলা কোন অভিধানে পতিতা শব্দের পুরুষবাচক কোন শব্দ নেই। এজন্য তিনি পতিতার পুরুষবাচক শব্দ পতিত আবিষ্কার করেন। এটাকে অভিধানভুক্ত করার জন্য বেশ জোরাজোরি করেন। এ বিষয় নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় কলামও লেখেন। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তার এই বিরোধিতা কোন কাজে আসেনি।
মেইল এস্কর্ট নামে এরা বেশি পরিচিত। সরাসরি এর প্রতিশব্দ বাংলা ভাষায় নেই। তবে এর যথার্থ মর্ম উঠে আসে, পুরুষ পতিতা শব্দে। রাজধানী ঢাকাতেই এদের চাহিদা সীমাবদ্ধ। অন্যান্য বিভাগীয় শহরে আছে কি না সেটা জানা যায় না। এদের অধিকাংশই শিক্ষিত ছেলে। অর্থাভাবে পরিবার পড়াশোনার খরচ বহন করতে না পারায় তারা নিজেদের আয় নিজেরা করে নিতে এ পেশার দিকে ঝুঁকছে। কেউ আবার বেকারত্ব দূর করতে এ পেশা বেছে নিচ্ছে। এখানে সুদর্শন, সুঠামদেহী পুরুষদের চাহিদা বেশি। যারা নিয়মিত ক্লায়েন্ট পেতে নিজেদেরকে জিম আর স্ব্যাস্থকর খাবার খেয়ে ফিট রাখছেন।
এমনটাই দেখা যায় বাংলাদেশের মেইল এস্কর্ট দ্বারা পরিচালিত কিছু ওয়েবসাইটে। যেখানে পুরুষের দরদাম, লেনদেন ও শারিরীক অদ্যপান্ত বৃত্তান্ত দেওয়া আছে। অনলাইনেই এদেরকে খুঁজে নেন নারীরা। তবে শহরের আভিজাত্য এলাকার বিভিন্ন স্থানে এসব ছেলেদের দু’একজনকে দেখা যায়। তবে চেনার কোন উপায় নাই। যদি না কেউ ওই জগতের লোক হয়ে থাকেন বা তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত না জানেন। এরা তাদের সাংকেতিক চিহ্ন হিসেবে রুমাল ব্যবহার করে থাকে। সেটা দেখেই নারীরা খুঁজে নেন তাদেরকে নির্ধারিত পসন্দের পার্টনার।
ও আরেকটা বিষয়—বাংলাদেশে মেইল স্কার্ট নিয়ে শর্ট ফ্লিমও তৈরি হচ্ছে। সেখানে মধ্যেবয়সস্ক নারীর বিপরীতে দেখানে হচ্ছে সদ্য কলেজ পড়ুয়া এক ছেলেকে। সেখানে দুটো বিষয়ই দেখানো হচ্ছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন বিষয়টা কতদূর পর্যন্ত গড়িয়েছে। যতটুকু সাধারণ মানুষ না জানছে, ফ্লিম সেটা স্বভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সবস্তরের জনগনের কাছে পরিচিত করছে।
সমাজের উচ্চবিত্ত ডিভোর্সী বিধবা নারীরাই এদেরকে শয্যাসঙ্গী হিশেবে বেছে নিচ্ছে। এর একটা কারণ বাংলাদেশে দৈনিক শতশত বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে অধিকাংশ নারীদের পক্ষ থেকেই। এদের অধিকাংশই শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী। এরা নিসঃঙ্গতার মুক্তির জন্য পুরুষ খুঁজে থাকেন। এসব নারীদের সংখ্যা যত বাড়ছে মেইল এস্কর্ট সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ প্রবাসী স্বামীর শূন্যতায় এদেরকে বেছে নিচ্ছে। যাদিও এর শুরুর গল্পটা ভিন্ন। বিদেশ থেকে নানান কাজে যেসব নারীরা বাংলাদেশে আসেন, তারা দীর্ঘদিন বাংলাদেশে থাকায় গাইডলাইন বা দৈহিক প্রয়োজন পূরণে অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পুরুষ বেছে নেন।
তাদেরকে সাথে ভাষাগত যোগাযোগের জন্য ইংরেজি বা অন্যান্য ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও মার্জিত আচরণ সম্পন্ন হতে হয়। এভাবে ধীরে ধীরে আভিজাত মহলে এর চাহিদা বাড়তে থাকে। আর এভাবে যদি অন্যান্য উন্নত দেশের মতো আমাদের সমাজের সব মহলে এর চাহিদার ব্যপকতা বৃদ্ধি পায় তাহলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।
বৈবাহিক জীবনের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেলে একটা সমাজ ধ্বংস হতে সময় নেবে না। একটা সমাজ নষ্ট হয়ে গেলে একটা সভ্যতা সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। এটা আমাদের সকলের জানা৷ মানবজীবনে দাম্পত্য বন্ধন অপরিসীম। পরিবার একজন মানুষের পরিচয়, ভিত্তি। জৈবিক চাহিদার উপর ভিত্তি করেই একটা পরিবার গঠিত হয়৷ সুস্থ সুন্দর সমাজ পরিবারের উপর নির্ভর করে। আর পরিবার প্রথা ধ্বংস হয়ে গেলে সমাজও ধ্বংস হয়ে যায়।
সমাজের নিম্নতর পেশা দেহবৃত্তি। সেটা নারী হোক বা পুরুষ হোক সবার জন্যই ঘৃণিত। পতিতাবৃত্তি তৈরি করে পারিবারিক জীবনর প্রতি অনীহা। এসব নারী পুরুষ আর কখনো সংসারী হয়ে ওঠে না। ফলে সমাজ অধঃপতনের দিকে ধাবিত হয়। ধীরে ধীরে একটা দেশ রাষ্ট্র সমাজ হুমকির মুখে নিপতিত হয়, বিলুপ্তির পথ ধরে।
Leave a Reply